হলমার্কবিহীন সোনা ও রূপার গয়না বিক্রির দায়ে টাওয়ার হ্যামলেটসের এক জুয়েলারি ব্যবসায়ী এবং তার প্রতিষ্ঠানকে কয়েক হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে।
কাউন্সিলের ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস দলের তদন্তের পর ৩৬৪ বেথনাল গ্রিন রোডে অবস্থিত পিওর অলংকার জুয়েলার্স লিমিটেড এবং এর মালিক মোহাম্মদ আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
২০২৪ সালের ৮ মার্চ, টাওয়ার হ্যামলেটস ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস এর কর্মকর্তারা লন্ডন অ্যাসে অফিস এবং ডব্লিউ.আর.আই ইনভেস্টিগেশনস–এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দোকানটি পরিদর্শন করেন। এটি ছিল "অপারেশন স্টাম্পিং ইট আউট" নামক একটি প্রকল্পের অংশ, যা লন্ডন অ্যাসে অফিস পরিচালনা করে এবং যার উদ্দেশ্য হল হলমার্ক আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
পরিদর্শনের সময়, কর্মকর্তারা বিপুল পরিমাণ হলমার্ক বিহীন গয়না পান। মি. মতিনকে এসব পণ্য বিক্রির তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলতে বলা হয় এবং ব্যবসাটি পুনরায় পরীক্ষা করা হবে বলে সতর্ক করা হয়।
২০২৪ সালের ২৬ জুলাই কর্মকর্তারা আবার দোকানটি পরিদর্শন করলে দেখা যায়, তিনি পরামর্শ মানেননি। দোকানে ৩,২১১টি গয়না প্রদর্শিত হয়, যার মধ্যে প্রায় ৮০% গয়নাতেই হলমার্ক ছিল না। তদন্তে দেখা যায় যে, ১,৫৬৫টি গয়না অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছিল। পরীক্ষার জন্য ৮৫টি গয়না বাজেয়াপ্ত করা হয়।
২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর, থেমস ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্টে মামলার শুনানি হয়। মি. মাতিন এবং পিওর অলংকার জুয়েলার্স লিমিটেড উভয়েই দোষ স্বীকার করেন।
অভিযোগসমূহ হচ্ছে: হলমার্কবিহীন সোনা ও রূপা বিক্রির জন্য হলমার্কিং এক্ট ১৯৭৩–এর অধীনে ১১টি অপরাধ এবং ভোক্তাদের অর্থাৎ ক্রেতাদের অধিকার ভুলভাবে উপস্থাপনের জন্য কন্স্যুমার প্রটেকশন ফ্রম আনফেয়ার ট্রেডিং রেগুলেশন্স ২০০৮–এর অধীনে ১টি অপরাধ (দোকানে “নো রিটার্ন অর রিফান্ড" সাইন টাঙানোর কারণে)।
আদালত অভিযুক্ত পিওর অলংকার জুয়েলার্স লিমিটেডকে হলমার্কিং অপরাধে £১,১০০ পাউন্ড জরিমানা, বিভ্রান্তিকর সাইন দেওয়ার জন্য আরো ১ হাজার পাউন্ড জরিমানা, ভিকটিম সারচার্জ বাবদ ৮৪০ পাউন্ড এবং কোর্ট প্রসিকিউশন খরচ বাবদ ২,৯০৯.৪৮ পাউন্ড পরিশোধের দন্ড প্রদান, আর প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আব্দুল মাতিনকে ১,১০০ পাউন্ড অর্থদন্ড এবং ৪৪০ পাউন্ড ভিকটিম সারচার্জ প্রদানের নির্দেশ দেন।
আর্থিক জরিমানা, খরচ ও সারচার্জ মিলে প্রতিষ্ঠানটিকে মোট ৭,৩৮৯.৪৮ পাউন্ড পরিশোধ করতে হবে।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পাবলিক প্রোটেকশন এবং ইন্টিগ্রেটেড এনফোর্সমেন্ট বিষয়ক ক্যাবিনেট সদস্য কাউন্সিলর আবু তালহা চৌধুরী বলেন: “হলমার্ক ছাড়া মূল্যবান ধাতুর গয়না বিক্রি করা বেআইনি। আইন নিশ্চিত করে যে গ্রাহকরা আসল এবং সঠিক মানের সোনা বা রূপা পাচ্ছেন। গ্রাহকরা যখন মূল্যবান জিনিস কেনেন, তখন তাদের আত্মবিশ্বাস থাকা উচিত যে তারা তাদের টাকার বিনিময়ে সঠিক পণ্য পাচ্ছেন।"
তিনি বলেন, রিফান্ড বা এক্সচেঞ্জ অধিকার অস্বীকার করে এমন সাইন প্রদর্শন করাও বিভ্রান্তিকর এবং বেআইনি। আমাদের ট্রেডিং স্ট্যান্ডার্ডস দল আইন ভঙ্গকারী ব্যবসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখবে এবং এমন ঘটনাকে জনসাধারণের নজরে আনবে।”
আপনি যদি সন্দেহ করেন যে কোনো ব্যবসা হলমার্ক ছাড়া বা নকল গয়না বিক্রি করছে, অথবা রিফান্ড সংক্রান্ত বিভ্রান্তিকর সাইন প্রদর্শন করছে, তাহলে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বেনামে রিপোর্ট করতে পারেন: www.towerhamlets.gov.uk/tradingstandards







