লন্ডন, ২৮ অক্টোবর: সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়নের উত্তর-পশ্চিমে ওসমানীনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী রুকুনপুর গ্রামে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকে’র উদ্যোগে গড়ে তোলা হচ্ছে আততাকওয়া মেগা প্রকল্প। আর্তমানবতার সেবায় আলী আহমেদ নেছাওর এর পরিবারের সদস্যদের দানকৃত ১৫০ শতক জমিতে আত তাকওয়া মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মেগা প্রকল্পটির বিস্তারিত তুলে ধরতে ২৮ অক্টোবর, মঙ্গলবার পূর্ব লন্ডনের তাড়াতাড়ি রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকে’র মিডিয়া পার্টনার ‘বালাগঞ্জ প্রতিদিন’ এর প্রধান সম্পাদক ও সাপ্তাহিক সুরমা’র কমিউনিটি নিউজ এডিটর মুহাম্মদ শরিফুজ্জামান এবং সংগঠনের চিফ ফান্ড রেইজিং অ্যাডভাইজার ফরহাদ হোসেন টিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকে’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আলী আহমেদ নেছাওর।
সংবাদ সম্মেলনে আলী আহমেদ নেছাওর বলেন, আজকে আমাদের রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের “আততাকওয়া মেগা প্রকল্প” এবং এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আপনাদের এবং আপনাদের মাধ্যমে দেশের মানুষকে অবহিত করতে আমরা এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। আমাদের এই ‘রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকে’ হলো ব্রিটিশ বাংলাদেশি মানবদরদী, দেশপ্রেমিক প্রবাসীদের অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠন। হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি জনাব নজরুল ইসলাম চৌধুরী উপদেষ্টা হিসেবে এই মেগা প্রকল্পের সাথে যুক্ত আছেন। এছাড়া স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার জনহিতৈষী লোকজন প্রকল্পের সাথে যুক্ত আছেন। আর্ত মানবতার সেবায় সম্পূর্ণ অলাভজনক এই প্রকল্পে থাকছে একটি এতিমখানা, একটি হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা, একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, একটি বৃদ্ধাশ্রম ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র সহ একটি মেটারনিটি হাসপাতাল। দেশের সেরা প্রকৌশলীদের দিয়ে আততাকওয়া মেগা প্রকল্পের নকশা এবং স্থাপত্য পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের জমি পরিষ্কার, মাটি ভরাট, রাস্তা নির্মাণ, দুটি প্রবেশ পথ নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগ ও সীমানা প্রাচীরসহ মূল ফটকের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া বৃক্ষরোপন কাজ চলমান রয়েছে। আগামী বছরের প্রথমদিকে মূল প্রকল্পের কাজ শুরু করে এবং অতি দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করে মানুষের সেবা কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এলাকার মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বর্তমানে মেটারনিটি হাসপাতাল নির্মাণকে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দেওয়া হচ্ছে। আপনারা জানেন মেটারনিটি হাসপাতাল হলো এমন একটি হাসপাতাল যেখানে গর্ভবতী মহিলা এবং নবজাতকের গর্ভাবস্থা ও প্রসবকালীন সময়ে বিশেষ যত্ন প্রদান করা হয়। যেখানে মা এবং শিশুর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ক্লিনিক্যাল সুবিধা থাকে। আমরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন একটি মেটারনিটি হাসপাতাল নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছি।
তিনি বলেন, বালাগঞ্জ গহরপুর আমরা কেবল আততাকওয়া মেগা প্রকল্প গড়ছি না; আমরা দেশের হতদরিদ্র, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য একটি আশার বাতিঘর বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। যেখানে আর্তমানবতার সেবাই হবে আমাদের সর্বোচ্চ অঙ্গীকার। আমাদের এতিম খানার শিশুরা, আমাদের হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা কেউ পিছিয়ে থাকবে না। কেউ কোন কিছুর অভাব বোধ করবে না। যুক্তরাজ্যে যেভাবে বৃদ্ধ বাবা-মাকে সেবা করা হয়, ঠিক সেভাবেই আমাদের বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের সেবা দেওয়া হবে। সেবা দিয়ে সেই সব অসহায় বাবা-মায়ের বৃদ্ধ বয়সের সময়কে আরও নিরাপদ করে তোলা হবে। আমাদের নির্মিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও মেটারনিটি হাসপাতালে প্রান্তিক ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আধুনিক এবং মানসম্মত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে। যা দেশের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আগামী প্রজন্ম দেখবে, কীভাবে প্রবাসী মানুষের দেশপ্রেম, ঐক্য, ত্যাগ ও নিষ্ঠা দেশের অসহায় প্রান্তিক মানুষের ভবিষ্যৎ পাল্টে দিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকে ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আপনারা সাংবাদিক ভাই-বোনেরা সহ সকল প্রবাসী বাংলাদেশিদের আত তাকওয়া মেগা প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। যেকোন দেশপ্রেমিক প্রবাসী চাইলে এই মেগা প্রকল্পে যুক্ত হতে পারবেন। প্রকল্পটিতে প্রবাসীরা অংশ নিতে চাইলে মাত্র দুই হাজার পাউন্ডে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও মাত্র এক হাজার পাউন্ডে আজীবন সদস্য হতে পারবেন। পরিবেশের কথা চিন্তা করে প্রকল্পটিতে আনুমানিক দুইশ গাছ রোপন করা হবে। এই গাছের ফল দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি মাদ্রাসার শিক্ষক, এতিমখানার শিক্ষার্থী, ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের ফলের চাহিদা পুরণ করবে। বৃক্ষরোপন কাজে কেউ শরিক হতে চাইলে শরিক হতে পারবেন। অনুদান এককালীন অথবা কিস্তিতে দেওয়া যাবে। প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আজীবন সদস্যদের রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকে’র পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হবে। উক্ত মেগা প্রকল্পটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আজীবন সদস্য হতে চাইলে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকে’র ওয়েবসাইট (https://rukondf.org/) ভিজিট করে এই ফোন- 07931 632 484 নাম্বারে অথবা এই ইমেইলে info@rukondf.org যোগাযোগ করার অনুরোধ জানাই। অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করতে চাইলে আমাদের সকল প্রকল্পের বিস্তারিত জানতে ও অনুদান দিতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার বিনীত অনুরোধ জানাই। আপনারা সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ, আমরা আপনাদের মূল্যবান পরামর্শ সহ সর্বাত্মক সহযোগিতা চাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকে’র চিফ অ্যাডভাইজার ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নর্দাম্পটন করবি বারা কাউন্সিলের সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সর্বজনাব সোহেল আহমেদ, ছহুল মুনিম, শহীদ আবুল কালাম সেতু, আতিকুর রহমান ও বিবিসিএ লন্ডন রিজিয়নের প্রেসিডেন্ট বদরুল ইসলাম এবং বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাস্ট এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মীরু।
সিলেট : বালাগঞ্জ-গহরপুর রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের স্বপ্নের মেগা প্রকল্প
- মাত্র দুই হাজার পাউন্ডে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও এক হাজার পাউন্ডে আজীবন সদস্য হওয়ার সুযোগ








