গ্রাম বাংলা ০৫ জুন ২০২৫

পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত শোলাকিয়া ও গোর-এ শহীদ বড় ময়দান প্রস্তুত

post

নিউজ ডেস্ক
টিভি নাইনটিন অনলাইন

কিশোরগঞ্জ:
কিশোরগঞ্জের প্রায় দুই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৮তম ঈদুল আজহার জামাত। দেশের অন্যতম বৃহত্তম এই ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।এবারো নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত আয়োজন করা হয়েছে। জামাত অনুষ্ঠিত হবে ঈদের দিন সকাল ৯টায়। এ ঈদগাহে ইমামতি করবেন আওয়ামী সরকারের আমলে ইমামতি হারানো ইমাম কিশোরগঞ্জ শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদরাসার প্রভাষক মাওলানা জুবায়ের ইবনে আব্দুল হাই।জানা যায়, ঐতিহাসিক এ মাঠে আশেপাশের জেলা থেকে মুসল্লিরা ঈদের জামাতে অংশ নেন। ঈদ জামাতকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। প্রতি বছর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে ঈদ জামাতের জন্য নেওয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। দেশের ঐতিহ্যবাহী সবচেয়ে পুরোনো এই মাঠে একটি মাত্র জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। বংশ পরম্পরায় এ মাঠে নামাজ পড়েন মুসল্লিরা।শোলাকিয়া মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী, ঈদের জামাত শুরুর আগে শটগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হবে। জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি এবং ১ মিনিট আগে ১টি গুলি ছুড়ে নামাজের জন্য মুসল্লিদের সংকেত দেওয়া হবে। বুধবার (৪ জুন) সকালে শোলাকিয়া মাঠে পরিদর্শনে শেষে ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।জেলা প্রশাসকের পরে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে ব্রিফ করেন ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোহা. কাজেম উদ্দীন ও র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার মো. আশরাফুল কবির।ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার মোহা. কাজেম উদ্দীন বলেন, ঈদের জামাতকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করতে ওয়াচ টাওয়ার ছাড়াও সাদা পোশাকে থাকবে পুলিশ। আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাচ্ছি। মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ের মাধ্যমে চেকিং হয়ে মুসল্লিরা মাঠে প্রবেশ করবেন। কাউন্টার টেরোরিজমসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। আশা করি নিরাপদে নির্বিঘ্নে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরতে পারবেন। প্রশাসন সর্বদায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে।কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ১৯৮তম পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মুসল্লিদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে অজুর পানি ও ওয়াশরুমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মুসল্লিদের কোনো শারীরিক সমস্যা হলে সেখানে মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও কাজ করবেন। তিনি আরও জানান, শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ লাইনে ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। র‌্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার মো. আশরাফুল কবির বলেন, শোলাকিয়া ঈদগাহে আসা-যাওয়ার গেটগুলোতে র‌্যাব সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। ওয়াচ-টাওয়ারে স্বয়ংক্রিয় স্নাইপার রাইফেল থাকবে যেন যে কোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধ করা যায়। বেশ কিছু পেট্রল কার থাকবে। সেগুলো শহরের বিভিন্ন এলাকায় টহল দেবে। এছাড়াও ট্রেনে দূর-দূরান্ত থেকে ঈদ জামাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে র‌্যাব মোতায়েন থাকবে।

আরো পড়ুন!

Sidebar Banner
Sidebar Banner