মেহেদী হাসান, খুলনা প্রতিনিধিঃ বিনা কোনো নোটিশে হঠাৎ করে খুলনার শাহচন্দ্রপুরী প্রেস হাউজের ১৩ নম্বর গোডাউনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন অন্তত ১৬০ জন শ্রমিক।
রোববার (১৮ মে) সকাল ১০টায় শ্রমিকদের বকেয়া প্রায় ৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা পরিশোধ ও পুনর্বহালের দাবিতে খুলনা-যশোর মহাসড়কের রেলিগেট মোড়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এই কর্মসূচির আয়োজন করে দৌলতপুর জুট প্রেস অ্যান্ড বেলিং ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন (রেজি. নং-১১৫৫)। সংগঠনটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিঠু, শ্রমিক নেতা সুজন শেখ, আফজাল জমাদ্দার, আবুল কালাম, সালাম খাঁ, নাসির মুন্সি এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিনা কোনো পূর্বঘোষণা বা নোটিশ ছাড়াই গোডাউনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে করে শ্রমিকরা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন।
তাঁরা আরও বলেন, একদিকে কাজ নেই, অন্যদিকে দীর্ঘদিনের মজুরি বকেয়া। অথচ মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আশ্বাস বা যোগাযোগ নেই। এমন চক্রান্তমূলক আচরণ শ্রমিকদের প্রতি চরম অবমাননার শামিল।
শ্রমিকদের দাবি'র মধ্যে রয়েছে— ৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ, কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও শ্রমিকদের পুনঃনিয়োগ ও স্বাভাবিক কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ।
শ্রমিক প্রতিনিধিদের মতে, শ্রম আইন অনুযায়ী কাজ বন্ধ করার আগে শ্রমিকদের ন্যূনতম নোটিশ ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ধরনের আচরণ শুধু অবিচারই নয়, তা আইনগতভাবে অবৈধ।
শ্রমিক প্রতিনিধি মো. ইকবাল হোসেন, মোস্তফা আকন্দসহ প্রেস হাউজের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা। তাঁদের ভাষ্য, শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই মজুরি দেওয়া শ্রমনীতির ন্যূনতম শর্ত। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র।
শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দাবি আদায়ে দ্রুত কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেওয়া হলে তারা বৃহত্তর কর্মসূচির দিকে যেতে বাধ্য হবেন।
এ বিষয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
দেশের শ্রমঘন শিল্প খাতগুলোর মধ্যে জুট ও প্রেস হাউজগুলো দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। সেখানে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে অবহেলা ও হঠাৎ করে কার্যক্রম বন্ধের ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব সংকট সমাধানে দ্রুত শ্রম আদালত ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের কার্যকর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।